মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাব
তেজস্ক্রিয় পদার্থ মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর যেসব প্রভাব বিস্তার করে সেগুলি হল- (i) ফুসফুস ও যকৃতের আলসার।
(ii) তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে দেহকোশের মিউটেশন ঘটতে পারে, তার ফলস্বরূপ ত্বক, অস্থি ও জরায়ুতে ক্যানসার সৃষ্টি হয়।
( iii) বন্ধ্যাত্ব, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, স্নায়বিক বৈকল্য।
(iv) থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিকতা।
(v) দৃষ্টিশক্তির হ্রাস।
চিত্র 16.28 শিশুর ওপর তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাব
(vi) ত্বকের বিভিন্ন পরিবর্তন, যেমন-অ্যাট্রফি, ইরাইথিমা, রঞ্জক পরিবর্তন ইত্যাদি।
(vii) পেশির দৌর্বল্য ও পেশির শিথিলতা।
(viii) গর্ভবতী স্ত্রীলোক অপূর্ণাঙ্গ ও অস্বাভাবিক শিশুর জন্ম দেয়।
তেজস্ক্রিয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ (Control of Radioactive Pollution):
তেজস্ক্রিয় পদার্থের দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি নিম্নরূপ- ④ প্রযুক্তিগত উপায়ে নিয়ন্ত্রণ: (i) উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে সঞ্চিত স্থানের মাটিতে তড়িৎ প্রবাহিত করে সক্রিয় তেজস্ক্রিয় পদার্থকে কাচ বা সিরামিকে রূপান্তরিত করলে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলি ওইসব পদার্থ থেকে মুক্ত হয়ে জলে বা মাটিতে মিশতে পারে না। (ii) তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করার সময় তেজস্ক্রিয় প্রতিরোধী বর্ম ব্যবহার করা উচিত। (iii) তেজস্ক্রিয়তার উৎস থেকে কাজ করার স্থানের দূরত্ব বাড়াতে হবে। (iv) আণবিক প্ল্যান্টে ও আকরিকের মাইনিং-এ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। (v) উঁচু চিমনি ব্যবহার করা দরকার, যাতে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ হ্রাস পায়। Ⓑ আইনসম্মত উপায়ে নিয়ন্ত্রণ: (i) গবেষণাগার এবং হাসপাতালে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে। (ii) পানীয় জল ও খাদ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ অনুমোদিত সীমার মধ্যে রাখতে হবে। (iii) তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারকারী শিল্পসংস্থাকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি নিতে হবে। (iv) তেজস্ক্রিয় পদার্থসম্পন্ন বর্জ্য পরিবেশে পরিত্যাগ করার পূর্বে তেজস্ক্রিয় পদার্থকে পৃথক করে নিতে হবে।
ব্যক্তিগত উপায়ে নিয়ন্ত্রণ: (i) তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করার সময় মুখোশ, বর্ম, গ্লাভস ইত্যাদি ব্যবহার করা দরকার। (ii) যে ঘরে তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করা হয় সে ঘর নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
বিষাক্ত দ্রব্য কী? (What is toxic material?)
■ যে দ্রব্য মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে প্রবেশ করে বিপাকীয় কাজে গোলযোগ সৃষ্টি করে নানারকম রোগ সৃষ্টি করে, তাকে বিষাক্ত দ্রব্য (toxic material) বলে। বিষাক্ত দ্রব্য প্রাণী ও মানুষের দেহে ক্যানসারঘটিত, জিনঘটিত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকৃতিজনিত, বমি, উদরাময় প্রভৃতি রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।।
Post Comment