ওজোন গহ্বর কী? (What is Ozone hole?):
ওজোন গহ্বর বা ওজোন হোল হল বায়ুমণ্ডলের 10 থেকে 40 কিলোমিটার উচ্চতায় অনিফয়ারের মধ্যে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ ও প্রতিহত করার জন্য ওজোন গ্যাসের যে প্রাকৃতিক আবরণ আছে, তার ক্ষয় বা পুরুত্ব নষ্ট হয়ে যাওয়া। বিজ্ঞানী ফারমেন ওজোন স্তরের অবক্ষয়কে ওজোন হোল নামে চিহ্নিত করেন। আসলে 1982 খ্রিস্টাব্দে অক্টোবরে অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে সমীক্ষারত একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী লক্ষ করে উর্ধ্বাকাশে একটি বৃহৎ অংশ জুড়ে ওজোনের পরিমাণ অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। পরবর্তী বছরগুলিতে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে তাঁরা দেখতে পান এই ওজোনের ঘাটতির পরিমাণ ক্রমশ ব্যাপকতর হয়ে গহ্বরের মতো হয়েছে। একেই বলা হয় ওজোন গহ্বর বা ওজোন হোল। সংজ্ঞা (Definition) (পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে 20-30 কিলোমিটার উচ্চতায় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে অবস্থিত ওজোন স্তরের ওজোন অণু ক্ষয় হওয়ার ফলে যে গহ্বর সৃষ্টি হয়, তাকে ওজোন হোল বলে।
ওজোন গহ্বর সৃষ্টির কারণ কী? (What are the causes of Ozone hole?):
ওজোন গহ্বর সৃষ্টির কারণগুলি হল-
① রেফ্রিজারেটার, ওষুধ তৈরিতে, পলিমার শিল্পে (গদি, বালিশ প্রস্তুতিতে) প্রভৃতি বিভিন্ন শিল্পে প্রচুর পরিমাণে CFCs ব্যবহৃত হয়। এই সমস্ত CFCs উদ্বায়ী, বাতাসে নির্গমনের পথ করে দিলে এগুলি ট্রপোস্ফিয়ারের ওপর দিক থেকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনকে ধ্বংস করে এবং অপসারিত করে।
এই গ্যাস মানুষের সৃষ্ট [CFCs হল কার্বন, ক্লোরিন এবং ফুরিনঘটিত যৌগসমূহ। যৌগগুলি হল-(i) ট্রাইক্লোরোফ্লুরো মিথেন বা Freon-11; (ii) ডাইক্লোরোফ্লুরো মিথেন বা Freon-12, (iii) ট্রাইক্লোরোফ্লুরো মিথেন বা Freon-13, এবং (iv) CF, [Freon-14.]।
② দ্রুতগামী উড়োজাহাজ যখন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে, তখন প্রচুর পরিমাণে NO এবং NO₂ (নাইট্রোজেনের অক্সাইড) নির্গত হয়-এগুলিও ওজোন স্তরের পক্ষে ক্ষতিকারক। পরিষ্কার করার তরল হিসেবে ব্যবহৃত হয়-যা ওজোন স্তর বিনাশের জন্য দায়ী।
③ শুল্ক ধোলাই ও পরিষ্কার করার তরল হিসেবে ব্যবহৃত কার্বন টেট্রাক্লোরাইডও ওজোন স্তর ক্ষয়ে অংশ নেয়। ইথাইল ক্লোরোফর্ম-যা দ্রাবক।
Post Comment