ভূপৃষ্ঠে আপতিত সূর্যালোকের বিভিন্ন অবস্থা :
সূর্যালোক যা প্রকৃতপক্ষে তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic radiation) তা ভূপৃষ্ঠে আপতিত হওয়ার পর বিভিন্ন অবস্থাপ্রাপ্ত হয়। ওই অবস্থাগুলি নিম্নরূপ:
(i) আপতিত সূর্যালোকের প্রায় 34% ভূপৃষ্ঠে হতে প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যের দিকে যায়। (ii) আপতিত রশ্মির প্রায় 42% বায়ুমণ্ডল, স্থলভাগ এবং সমুদ্র কর্তৃক শোষিত হয়। (iii) আপতিত রশ্মির প্রায় 23% জলকে বাষ্পে পরিণত করার জন্য এবং জলীয় বাষ্পকে জলচক্রের জন্য অপসারিত করার প্রয়োজনে ব্যয় হয়। (iv) প্রায় 1%-এর কিছু কম ব্যয় হয় বায়ু চলাচল অব্যাহত রাখতে এবং সমুদ্রের স্রোত বজায় রাখতে। (৩৩) উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে তথা সালোকসংশ্লেষের প্রক্রিয়ায় ব্যয় হয় 0.023%।
সূর্য একটি জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড, সূর্যের উত্তাপ অনেক বেশি। প্রায় 107°C-র বেশি উত্তাপ হওয়ায় সূর্য থেকে নির্গত বিকিরিত আলোকরশ্মির তরঙ্গাদেখ্য খুব কম। তাই ওই রশ্মি সহজেই বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। পতিত হওয়ার পর বায়ুমণ্ডলে তার অনেকাংশ শোষিত হয়। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত অবলোহিত রশ্মি ফিরে যাওয়ার সময় যেমন একদিকে রশ্মিগুলির তাপ কমে, অন্যদিকে তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অবলোহিত রশ্মিকে মহাশূন্যে নির্গত হতে দেয় না। এর ফলেই ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত থাকে। এই ঘটনাই হল প্রকৃতপক্ষে গ্রিনহাউস প্রভাব। এ কথা সত্য যে, বায়ুস্তর না থাকলে পৃথিবী বরফেই ঢাকা থাকত। আবার বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে, উত্তাপ বাড়ার কারণে বরফ গলতে শুরু করলে সমুদ্রে জলস্ফীতি বাড়বে এবং স্থলভাগের অনেকাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়বে।
Post Comment