সুসংহত পেস্ট পরিচালনা
কীটনাশক ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণীর দেহে বিষক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। এর ফলে বহু উপকারী প্রাণী-কীটপতঙ্গ, মাছ, ব্যাঙ, সরীসৃপ, পাখির মৃত্যু ঘটছে। এমনকি এইসব রাসায়নিক পদার্থগুলি খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করার পর কলাকোশে সঞ্চিত হয়ে নানান রোগ সৃষ্টি করছে এবং বংশগতভাবে সন্তান-সন্ততির মধ্যেও বিস্তার লাভ করছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার এবং জৈবিক পদ্ধতিতে পেস্টদের দমন করে পেস্ট নিয়ন্ত্রণের যে উপায় বা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তাকেই সুসংহত পেস্ট পরিচালনা বা বলা হয়।
■ ফার্টিলাইজার (Fertilizer): কৃষিক্ষেত্রে যেসব সার ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া, গোবর সার, মিশ্র সার, সবুজ সার ইত্যাদি। এইসব সারের মধ্যে রাসায়নিক সার মাটি ও জলের দূষণ ঘটায়।
■আগাছানাশক (Weedicides) : কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমনের জন্য বিভিন্ন রকমের আগাছানাশক ব্যবহার করা হয়। যেমন-2, 4-D; 2, 4, 5-T ইত্যাদি।
উল্লিখিত কৃষিজ রাসায়নিকগুলি বেশিরভাগ অভঙ্গুর (nondegradable) হওয়ায় মাটিতে মেশে না, উপরন্তু মাটির দূষণ ঘটায়। ফলে মাটিতে বসবাসকারী জীবের পক্ষে ক্ষতিকর হয়। এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। ফলে মাটির বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হয়।
কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত সার, পেস্টনাশক, আগাছানাশকগুলি বর্ষার জলে প্লাবিত হয়ে কৃষিক্ষেত্র থেকে জলাশয়ে গিয়ে জমা হয় এবং জলজ প্রাণীদের মৃত্যুর কারণ ঘটায়।
বিপজ্জনক বর্জ্য [Hazardous Wastes]:
যেসব ব্যবস্তু মানুষসহ প্রাণীদের ভয়ানক ক্ষতিসাধন করে, তাদের বিপজ্জনক বর্জ্য বলে। শিল্পে উৎপাদিত বিভিন্ন পেস্টিসাইড, যেমন-কীটনাশক (DDT, BHC, অলড্রিন, এনড্রিন), ফানজিসাইড বা ছত্রাকনাশক (বোরোডক্স মিক্সাচার, কপার সালফেট), আগাছানাশক বা হার্বিসাইড (2, 4-D, DNOC), রোডোন্টিসাইড (আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড, বেরিয়াম কার্বনেট, জিঙ্ক ফসফাইড), নিমাটিসাইড (মিথাইল ব্রোমাইড, ক্লোরোপিক্রিন) ইত্যাদি; রবার এবং রাসায়নিক বস্তু, ধাতব বস্তু (সিসা, আর্সেনিক ক্যাডমিয়াম, পারদ ইত্যাদি) ইত্যাদি থেকে বিপজ্জনক বর্জ্য সৃষ্টি হয়। এগুলি মানুষের মারাত্মক ক্ষতি করে। এ ছাড়া হাসপাতালে অব্যবহৃত নষ্ট হয়ে যাওয়া রক্ত, অপারেশনের যন্ত্রপাতি ধৌত জল ও রাসায়নিক এবং তাদের বাহক (মশা, মাছি, ইঁদুর, বিড়াল, কুকুর ইত্যাদি) আমাদের ভয়ানক ক্ষতিসাধন করে।
Post Comment