তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগের বৈশিষ্ট্য টীকা লেখ 2024
সূচনা:- বিবর্তনের গতি অনুসরণ করে মানুষ ধাতুর ব্যবহার শিখল। ধাতুর মধ্যে মানুষ প্রথম ব্যবহার করতে শেখে তামা। তামা ব্যবহারের কিছুকাল পরে মানুষ তামার সঙ্গে টিন মিশিয়ে আরো শক্ত ধাতু ব্রোঞ্জ আবিষ্কার করে। মেসোপটেমিয়া, মিশর, ভারত এবং চৈনিক সভ্যতায় ব্রোঞ্জের আবিষ্কার হয়। ধীরে ধীরে ব্রিটেন, সুইডেন, ডেনমার্ক ও উত্তর জার্মানিতে এর বিস্তার ঘটে। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ পর্যন্ত ব্রোঞ্জযুগ স্থায়ী ছিল।
Contents
তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগের বৈশিষ্ট্য
■ ব্রোঞ্জযুগের বৈশিষ্ট্য:
ব্রোঞ্জযুগের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল-
◆(১) নগর সভ্যতা:
ব্রোঞ্জ যুগে নগরসভ্যতা আরো বিকশিত হয়। নগরায়নের ফলে শ্রমবিভাগের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসে। শ্রম বিভাগকে কেন্দ্র করে সমাজে পৃথক শ্রেণিবিভাজন ও স্তরবিন্যাস গড়ে ওঠে।
◆(২) শাসন ব্যবস্থা ও আইন:
শ্রেণিবিন্যাস বিস্তৃত হওয়ায় সমাজ কাঠামোতে গুণগত পরিবর্তনের সূচনা হয়। বহিঃশত্রুর আক্রমণের আশঙ্কায় নগরের চারপাশ প্রাচীর স্থাপন করা হয়। তীব্র শ্রেণিবিন্যাস, দাসভিত্তিক শ্রম ব্যবস্থা, অতিরিক্ত কর আদায়ের প্রয়োজনে কঠোর ও শক্তিশালী শাসনব্যবস্থার সূচনা হয়। রাজাকে শাসনকার্য পরিচালনায় পরামর্শ দিতে এগিয়ে আসে পুরোহিত শ্রেণি। সমাজে তাদের বিশেষ প্রভাব প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।
◆(৩) অর্থনীতি:
ব্রোঞ্জযুগে কৃষি ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল। দ্রব্য বিনিময়ের পরিবর্তে ব্রোঞ্জের তৈরি মুদ্রা অর্থনীতির বিকাশ ঘটে। সেচ ও বাঁধ নির্মাণ করে কৃষিকাজ চলত।
◆(৪) ব্রোঞ্জের হাতিয়ার:
ব্রোঞ্জ যুগে একশ্রেণির মানুষ ধাতুবিদ্যায় বিশেষভাবে দক্ষতা অর্জন করে। ফলে ব্রোঞ্জের হাতিয়ারের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। ব্রোঞ্জ নির্মিত বর্ম, শিরস্ত্রাণ, বর্শা, তলোয়ার ইত্যাদির ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়। সামন্ত রাজাগণ ব্রোঞ্জের অস্ত্রের সাহায্যে সজ্জিত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সামন্ত রাজ্যগুলি আক্রমণ ও দখল করে নতুন নতুন উপনিবেশ স্থাপন করত।
◆(৫) লেখা আবিষ্কার:
ব্রোঞ্জ যুগে লেখা আবিষ্কার হয়। ফলে শিক্ষা ও জ্ঞানরাজ্যে নতুন যুগের আগমন ঘটে।
Post Comment