টীকা লেখো: বাংলা সাহিত্যে বিদ্যাপতির অন্তর্ভুক্তির কারণ
উত্তর: মৈথিল কোকিল কবি বিদ্যাপতি বাংলার কবি না হয়েও স্বীয় কাব্যকীর্তির মহিমায় বাঙালির অন্তর্লোকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি মিথিলার কবি হয়েও বাঙালির জীবন সাধনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছেন। তাঁর মৈথিলী ভাষায় রচিত পদাবলী বাঙালি বৈষ্ণব কবিদের পদরচনায় অনুপ্রাণিত করেছে। বাঙালি কাব্য-রসিক মাত্রেই
তাঁর রচিত পদাবলী অমৃতবৎ আস্বাদন করেছেন। মধ্যযুগের বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশেষত বৈষ্ণব সাহিত্যের পিতামহ হিসাবে বিদ্যাপতির প্রতিষ্ঠা ঘটে। মহাপ্রভু চৈতন্য থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত বাংলার সাধক, কবি মনীষী ও সাধারণ মানুষ বিদ্যাপতিকে পরমাত্মীয় হিসাবে গ্রহণ করেছেন। চৈতন্যোত্তর কবিগণ যেমন গোবিন্দদাস, জ্ঞানদাস, বলরামদাস প্রভৃতির ওপর বিদ্যাপতির প্রভাব অনস্বীকার্য। ছন্দের দিক থেকে বিদ্যাপতি দীর্ঘকাল বাংলা কাব্যসাহিত্যের ক্রমবিকাশে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। এইসব কারণে বিদ্যাপতিকে বাংলা সাহিত্যে অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন রয়েছে।